Type Here to Get Search Results !

ধুঁধুল/পুরুল চাষের উন্নত পদ্ধতি। Improved method of Dhudhul / Purul cultivation.

ধুঁধুল/পুরুল চাষের উন্নত পদ্ধতি।Improved method of Dhudhul / Purul cultivation:

ধুন্দুল/পুরুল এর বিজ্ঞানসম্মত নাম—Luffa acgyptica Mill.

ধুঁধুল/পুরুল ও আমাদের হেঁসেলে একটা সবজি। এর তরকারি খেতে সুস্বাদু। সাদা ও সবুজ রঙের ফসল। এটি বুনাে লতানে গাছ।এর কচি ফল সবজি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য সবজির তুলনায় এটি নবাগত।রাসায়নিক গুণ—প্রতি ১০০ গ্রাম পুরুল / ধুন্দুলের খাদ্যোপযােগী অংশে থাকে জলীয় অংশ ৯৪.৩ গ্রাম, শ্বেতসার ৪.৪ গ্রাম, প্রােটিন ০.৮ গ্রাম, স্নেহ পদার্থ ০.২ গ্রাম। এছাড়াও এতে কিছু ভিটামিন রয়েছে।এর ফল ও বীজ ভেষজ গুণ সম্পন্ন। ফল স্মিগ্ধ ও মধুর;পেট ফাঁপা ও বায়ু কারক, বলকারক এবং বীজ বিরেচক ও বমন কারক।এর পাকা ফলের ছিবড়ে স্নানের স্পঞ্জ হিসাবে, বাসন-কোসন পরিষ্কারের ছিবড়ে হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ থেকে তৈরী তেল বিভিন্ন প্রকার শিল্পে ব্যবহার করা হয়।


 ধুন্দুলের বিভিন্ন জাত :  

এটি একটু তেতাে জাত, উচ্ছে বা করলার চেয়ে অবশ্য কম। ভারতীয় কৃষি গবেষণা সংস্থার পুসা চিকনি, পুসা সুপ্রিয়া  অধিক ফলনশীল জাত। অন্য আরাে কিছু জাতও আছে। যেমন ঘিয়া, তরাই ধুধুল, এস. এস. জি.পি. ইত্যাদি। হাইব্রিড এন.এম.এইচ.জি-১০, এম.এস.জি. এইচ-১, হারিতা ইত্যাদি।

মাটি তৈরীর পদ্ধতি:

জলনিকাশের ব্যবস্থাসহ বেলে দোআঁশ, এঁটেল দোআঁশ ও পলিমাটিতে এর চাস ভাল হয়। ৩-৪ বার লাঙ্গল চালিয়ে এবং মই দিয়ে মাটি তৈরী করতে হবে।

চাষের সময় :

গ্রীষ্মে ফলন তুলতে হলে পৌষ-মাঘে চাষ করতে হবে। বর্ষায় ফলন তুলতে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে চাষ করতে হবে।

বীজের পরিমাণ : উন্নত জাত প্রতি একরে এক কেজি।হাইব্রিড ১৭৫-২০০ গ্রাম/বিঘা।

বীজশােধন পদ্ধতি:

যে জলে বীজ বােনার আগে ভেজানাে হবে, সেই জলে লিটার প্রতি ২ গ্রাম কার্বেনডাজিম দিতে হবে। অন্যভাবে সাধারণ জলে বীজ ভেজানাের পর কেজি প্রতি বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি নামক জৈব ছত্রাকনাশক মেশানাে হয়।

বােনার পদ্ধতি : ১×১ মিটার দূরত্বের ব্যবধানে গর্ত করে সারিতে বীজ বুনতে হবে।গাছ মাটিতে বা মাচায় লতিয়ে বাড়তে থাকে।

সার প্রয়োগ কীভাবে করবেন?

জমি তৈরী করার সময় একরে শেষ চাষের  আগে ১৫-২০ গাড়ি গােবর বা অন্য জৈব সার, ২০ কেজি, ইউরিয়া, ২০ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট এবং ২০ কেজি, মিউরেট অব পটাস প্রয়ােগ করতে হবে।


চাপান সার কখন প্রয়োগ করবেন?

বীজ বােনার ২০-২৫ দিন বাদে এবং দেড় মাস পরে প্রতি একরে ৩৫ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে।

ধুন্দুল /পুরুল চাষে রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রনের পদ্ধতি :

ফলের মাছি :

কচি ফলের ওপর ছিদ্র করে ডিম পাড়ে এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। বাচ্চা পােকা ফলের নরম অংশ খেতে শুরু করে। এর ফলে ফল বেঁকে যায়। ২ লিটার জলে ৫০০ গ্রাম গুড়, ২০ গ্রাম কার্বারিল ও ২০ গ্রাম ইস্ট গােলা হয়। ঐ জল অল্প অল্প করে অনেকগুলি পাত্রে নিয়ে ক্ষেতে বসালে মাছি এই পাত্রের মিশ্রণে আকৃষ্ট হয় এবং মারা যায়। এছাড়া প্রতি লিটার জলে ০.৭৫ মিলি নুভান গুলে স্প্রে করা যায়।

নালী পােকা বা লিফ মাইনর : 

পাতার দু’ ত্বকের মাঝে সুড়ঙ্গ সৃষ্টি করে। সুড়ঙ্গের মধ্য থেকে সবুজ অংশ খেতে খেতে এগােয়। ওপর থেকে দেখলে পাতায় আঁকা বাঁকা দাগ লক্ষ্য করা যায়। পাতা ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। প্রথমদিকে প্রতি লিটার জলে ৫ গ্রাম নিমবীজ গুঁড়াে বা ৩ মিলি অ্যাজাডাইরেক্টিন (২ শতাংশ ইসি) গুলে স্প্রে করলে কাজ পাওয়া যায়। পরে প্রতি লিটার জলে ২ মিলি রােগার বা ০.৭৫ গ্রাম অ্যাসাটাফ গুলে স্প্রে করা হয়।

শুকনাে পচা :

গাছের গােড়ার পাতার কিনারা থেকে বাদামী রঙ ধরে। তারপর শুকোতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ওপরের দিকের পাতাতে সংক্রামিত হয়। প্রতি লিটার জলে ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন বা ০.৫ গ্রাম ইন্ডেক্স বা ০.৭৫ মিলি টিল্ট গুলে স্প্রে করা হয়।

সাদা পাউডার রােগ :

পাতায় ধূসর দাগ হয়। ঐ দাগের ওপর সাদা পাউডার জমে। আঙুল ছোঁয়ালে পাউডার লেগে যায়। পরে পাতা শুকিয়ে যায়। প্রতি লিটার জলে ০.৭৫ মিলি টিল্ট বা ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন বা ০.৫ মিলি ক্যালিক্সিন গুলে স্প্রে করা হয়।

আমাদের এই website-এ প্রবেশ করার জন্য আপনাদের সকলকে অসংখ ধ্যন্যবাদ।আমরা এই ওয়েবসাইট -এর মাধ্যমে সমস্ত শাক-সবজি, ফসল চাষবাস এর সবরকম বিষয় নিয়ে আলোচনা ও পোস্ট করে থাকি। আমাদের এই পোষ্টটি ভালোলাগলে আমাদের ওয়েবসাইট (চাষবাস-বারোমাস)-টিকে Follow করতে পারেন। আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। ধ্যন্যবাদ।

_______________________________________________________________

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.