Type Here to Get Search Results !

সংকর ( বোরো ) ধানের সম্পূর্ণ সঠিক চাষ পদ্ধতি । PADDY FARMING.

 সংকর ( বোরো )  ধানের সম্পূর্ণ সঠিক চাষ পদ্ধতি । PADDY FARMING.

 
ভারতে সংকর ধানের (হাইব্রিড) উন্নয়ন ও ব্যবহারের উপর নিবিড় গবেষণার ফলস্বরূপ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চাষী ভাইদের কাছে ১১টি সংকর ধানের জাত পোঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বােরাে মরশুমের চাষের জন্য জাতগুলি হল নিম্নরূপ-

সংকর ধানের জাত -  সি.এন.এইচ, আর. ৩ ,  মেয়াদ ১৪০-১৪৫  দিন,  ফলন ক্ষমতা ৬.৫-৭.০ টন/ হেক্টর, ধানের আকার - মাঝারি সরু।

সংকর ধানের জাত - পি. এইচ. বি. ৭১ ,  মেয়াদ  ১৫০-১৬০  দিন,  ফলন ক্ষমতা ৭.০-৮.০ টন/হেক্টর, ধানের আকার - মাঝারি সরু।

সংকর ধানের জাত - পি. এ. ৬২০১ ,  মেয়াদ  ১৪৫ - ১৫৫   দিন,  ফলন ক্ষমতা ৬.৫-৭.৫ টন/হেক্টর, ধানের আকার - মাঝারি সরু। অন্যান্য গুণাবলী - ঝলসা রোগ ও বাদামী শােষকপোকার মাঝারি প্রতিরােধী।

সংকর ধানের জাত - ডি.আর.আর, এইচ ১ ,  মেয়াদ  ১৪৫ - ১৫৫   দিন,  ফলন ক্ষমতা ৬.৫-৭.৫ টন/হেক্টর, ধানের আকার - মাঝারি সরু। অন্যান্য গুণাবলী - ঝলসা রোগ - এর মাঝারি প্রতিরােধী।

সংকর ধানের সম্পূর্ণ সঠিক চাষ পদ্ধতি । PADDY FARMING.
Image by Erlian Zakia Ayu Anggarani from Pixabay 

➤ সংকর ধানের সম্পূর্ণ সঠিক চাষ পদ্ধতির বিভিন্ন ধাপ :


বীজতলা পরিচর্যা :- 

বীজতলাতে বীজ বােনার সময় :- বােরা মরশুমে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি।

বীজতলা তৈরি :-  কাদান বীজতলা তৈরী করতে হবে। এর জন্য জমিতে জলের উপস্থিতিতে ২-৩ বার চাষ দেবার পর একবার মই দিতে হবে। বীজ বােনার আগে ৫-৬ দিন ধরে কাদান জমিতে ২-৩ সেমি, জল ধরে রাখতে হবে।

বীজতলার জমির পরিমাণ ও আকার :- 

১ হেক্টর জমি রােয়ার জন্য  - ১৫ কাঠা বা ২৫ শত্ক বা ১০০০ বর্গ মি.
১ বিঘা জমি রােয়ার জন্য (৩৩ শতক) : - ২ কাঠা বা ৩.৩ শতক বা ১৩৩.৩ বর্গ মি.

 বীজতলার আকার :- 
দৈর্ঘ্য - সুবিধামতাে,  প্রস্থ - ১ মিটার বা ৩ ফুট ৩ ইঞ্চি।

দুটি বীজতলার মাঝখানে নালা :- 

প্রস্থ - ২০ সেমি. (৮ ইঞ্চি), গভীরতা :- ১০ সেমি. (৪ ইঞ্চি)

 বীজতলায় বীজ বােনার হার :- 

প্রতি বর্গ মিটার বীজতলাতে ১৫-২০ গ্রাম বীজ বুনতে হবে। অর্থাৎ ২০ মিটার লম্বা ও ১ মিটার চওড়া একটি
বীজতলাতে ৩০০-৪০০ গ্রাম বীজ বুনতে হবে। এক্ষেত্রে ঠিকমত পরিচর্যা করলে বীজতলাতে প্রতি চারাগাছে ৪-৫ টি পাশকাঠি জন্মায়।

বীজের হার :- 
১ হেক্টর জমি রােয়ার জন্য  ২০ কেজি।
১ বিঘা জমি (৩৩ শতক) রােয়ার জন্য  ২.৬৬৬ কেজি।

বীজ শােধন পদ্ধতি :

প্রথমে সংকর ধানের বীজ সাধারণ জলে ১৮-২০ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরে জল থেকে হেঁকে নিয়ে বীজের গায়ের জল শুকিয়ে নিতে হবে। এবার জলশােষিত প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে কার্বেণ্ডাজিম ৫০ বা ট্রাইসাইক্লজোল ৭৫ শতাংশ প্রতি লিটার জলে গুলে ২ গ্রাম হিসাবে নিয়ে ওষুধ গােলা জলে ঐ বীজ ৮ ঘন্টা ভেজাতে হবে।

বীজের অঙ্কুরােদগমের জন্য জাক দেওয়া :

পরিশােধিত বীজকে ভেজা চটের মধ্যে আলগা ভাবে রেখে উপযুক্ত উপায়ে ৩৬-৪৮ ঘন্টা ধরে জাক দিলে বীজ থেকে ছােট ছােট কলা বের হয় অর্থাৎ কলানাে বীজ পাওয়া যায়।

বীজতলাতে জৈবসার ও রাসায়নিক সার প্রয়ােগ পদ্ধতি :  

প্রয়ােগের সময় :- 

জৈব /রাসায়নিক সার প্রয়ােগ :
 
বীজ বােনার আগে ১৫ কাঠা তে গোবর সার  ২৫০০ কেজি, ইউরিয়া ১০.৯০কেজি, সিঙ্গল সুপার ফসফেটঃ  ৩১.২৫ কেজি, মিউরিয়েট অব পটাশ : ০৮.৪০ কেজি।
বীজ বােনার আগে ২কাঠা তে গোবর সার-  ৩৩৩ কেজি, ইউরিয়া -১.৪৪৭ কেজি, সিঙ্গল সুপার ফসফেটঃ ৪.১৬৭ কেজি, মিউরিয়েট অব পটাশ : ১.১১৪ কেজি।
 বীজ বােনার ২০ দিন পর ১৫ কাঠাতে  ইউরিয়া - ৫.৪৫ কেজি,  ২ কাঠা তে ০.৭২৪ কেজি।
চারা তোলার ৭ দিন আগে ১৫ কাঠাতে  ইউরিয়া - ৫.৪৫ কেজি,  ২ কাঠা তে ০.৭২৪ কেজি।

বীজতলায় বীজ বােনা :

সঠিক পরিমান বীজতলায় পরিমান মত কলানাে বীজ বুনতে হবে। বীজ বােনার সময় বীজতলায় জল থাকা
চলবে না। তবে বীজ বােনার ৪ ঘন্টা পর থেকে বীজতলায় ছিপছিপে জল রাখতে হবে।

বীজতলায় সেচ পদ্ধতি :

বীজতলা যেন শুকিয়ে না যায়। চারাগাছ যখন ২ সেমি. লম্বা হবে তখনও ছিপছিপে জল ধরে রাখতে হবে। চারা বড় হবার সঙ্গে সঙ্গে ২.৫-৫ সেমি. (১-২ ইঞ্চি) জল ধরে রাখতে হবে। ইউরিয়া চাপান দেবার সময় বীজতলায় জল থাকা চলবে না কিন্তু ইউরিয়া প্রয়ােগের ৪৮ ঘন্টা পর বীজতলায় জল দিতে হবে। চারাগাছে পাশকাঠি বের হওয়া শুরু হলে বীজতলায় ছিপছিপে জল রাখতে হবে, যা পাশকাঠি জন্মাতে সাহায্য করে। ঠাণ্ডার প্রকোপ থেকে চারাগাছকে রক্ষা করতে হলে দিনের বেলায় বীজতলাতে রােদ খাওয়াতে হবে কিন্তু সন্ধ্যের আগে বীজতলায় জল ঢুকিয়ে সারারাত বীজতলায় জল ধরে রাখতে হবে।

ব্রিদ্রঃ এই চাষ পদ্ধতির পরবর্তী ধাপ গুলি জানতে পরের পোস্টে ক্লিক করুন। 
 
____________________________________________________________________-

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.