আধুনিক পদ্ধতিতে রসুন চাষ করুন।Garlic Cultivation :
রসুন সারা ভারতেই পেঁয়াজের মতাে একটি অতি প্রয়ােজনীয় ফসল। এটি আবার তরকারির মশলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়, মাছ-মাংস ও শাক-সবজি ইত্যাদি রান্নায় রসুনের স্বাদ একটা আলাদা মাত্রা এনে দেয়। এছাড়া আচার ও চাটনিতে এর ব্যবহার হয়। রসুন কন্দ জাতীয় ফসল এবং এর কন্দগুলাে কোয়ার সমষ্টি। রসুন ব্যবহার করলে অজীর্ণ, ক্রিমি, সর্দি, কাশি, টাইফয়েড, ডিপথরিয়া, বাতরােগ ছাড়াও যে কোনাে রকম চর্মরােগ সেরে যায়। রসুন থেকে তৈরী ওষুধ অনেক রকমের অসুখ, যেমন ফুসফুসের রােগ, আন্ত্রিক রােগ, হুপিংকাশি, বাতরােগ, কানে ব্যথা ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।
রসুনে শতকরা ৬২.৮ ভাগ জল, ৬.৫ ভাগ প্রােটিন, ০.৮ ভাগ ফ্যাট, ১ ভাগ খনিজ পদার্থ, ০.৮ ভাগ আঁশ, ২৮ ভাগ কার্বোহাইড্রেট, ০.৩৫ ভাগ ফসফরাস, ০.০৪ ভাগ ক্যালসিয়াম, ১৪ ভাগ লােহা এবং ভিটামিন-সি থাকে।রসুনের ব্যবহার নিয়মিত বা প্রতিদিন হয়।সেজন্য বাজারে রসুনের চাহিদা সবসময়।তাই এটি চাষ করা সবথেকে লাভজনক।
![]() |
রসুন চাষে প্রয়োজনীয় জলবায়ু।
রসুনের চাষ ভাল হয় নাতিশীতােষ্ণ অঞ্চলে। এ ফসল বেশি শীত বা বেশি গরম কোনােটাই সহ্য করতে পারে না। যেমন দীর্ঘদিন ধরে একটানা গরম চললে রসুনের কোয়া দানা বাঁধতে পারে না। তাই রসুন শীতকালেই চাষ করা হয় এবং গ্রীষ্মের শুরুতেই ফসল তােলা হয়।
রসুন চাষে প্রয়োজনীয় মাটি :
প্রায় সব রকমের মাটিতেই রসুন চাষ করা যায়। অবশ্য জল নিকাশের ভাল ব্যবস্থা আছে এমন দোআঁশ মাটিতেই রসুনের চাষ ভাল হয়। আবার এঁটেল দোআঁশ মাটিতেও এর চাষ হয়ে থাকে।
রসুন চাষে প্রয়োজনীয় জমি তৈরীর পদ্ধতি :
৭-৮ বার লাঙল চালিয়ে এবং মই দিয়ে মাটি তৈরী করতে হয়। এ সময়ে ৮-১০ গাড়ি গােবর সার বা আবর্জনা সার মাটিতে ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে।
রসুনের বিভিন্ন জাত :
রসুনের
উন্নত জাত সংখ্যায় খুবই কম। এরই মধ্যে ফাউরি ও রজল্লা গর্দি নামে দুটি
মাত্র জাত চাষ হয়ে থাকে। রসুন দু'রকমের হয়ে থাকে। একটি জাত হলাে এক
কোয়ার এবং অপরটি ছােট ছােট অনেকগুলি কোয়ার সমষ্টি।
দেশী জাত : কানওয়ারী, ফাউরি ও রজল্লা গর্দি। বিদেশী জাতঃ সিওল, তাতুল এবং ইটালিয়ান।
রসুনের বীজ বপন পদ্ধতি :
(১) বীজ বােনার সময় : আশ্বিন থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত রসুনের বীজ বুনতে হয়।
(২) বীজের পরিমাণ : প্রতি একর জমির জন্য ৭৫-৯০ কেজি রসুন লাগে। রসুনের কোয়া ভেঙে ভেঙে লাগাতে হয়।
(৩) বীজ বােনার পদ্ধতি : রসুনের বীজ সাধারণত হাত দিয়ে পুঁতলে হয়। ৬ ইঞ্চি (১৫ সে. মি.)-এর ব্যবধানে সারি করে সারিতে ৩ ইঞ্চি (৭.৫ সে. মি) অন্তর রসুন লাগাতে হবে।
রসুন চাষে প্রয়োজনীয় সার প্রয়ােগ পদ্ধতি :
মূল সার হিসেবে প্রায় ২০ কেজি. নাইট্রোজেন, ২০ কেজি, ফসফরাস এবং ২০ কেজি পটাশিয়াম প্রয়ােগ করতে হবে। রসুনের বীজ বােনার ১ মাস পর ২০ কেজি নাইট্রোজেন চাপানি সার হিসেবে দিতে হবে।
রসুন চাষে প্রয়োজনীয় পরিচর্যা :
এ ফসলের বড় শত্রু হলাে আগাছা। তাই আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি আল্গা করার জন্য জমিতে দু-তিনবার নিড়েন দিতে হবে। জলসেচের পর “জো” এলে নিড়েন দিয়ে মাটি আল্পা করে নিতে হয়। তবে হাল্কা ভাবে নিড়েন দিতে হবে। আগাছা নাশক ওষুধ, যেমন একর প্রতি লিনারন ১ কেজি, প্রমিট্রিন ১.৩ কেজি, প্রয়ােগ করলে আগাছা দমন করা যায়।
রসুন চাষে প্রয়োজনীয় জলসেচ পদ্ধতি :
রসুনের বীজ বােনার পর জমির রসের পরিমাণ কতখানি তা বুঝে জলসেচের ব্যবস্থা করতে হবে। গাছ একটু বড় হলেই ১০-১৫ দিনের ব্যবধান সেচ দিতে হবে। কন্দ তথা গােয়া গঠনের সময় জমিতে যথেষ্ট রস থাকা দরকার। তাই এ সময় অবশ্যই সেচ দিতে হবে। আর ফসল তােলার দু-তিনদিন আগে সেচ দেওয়া দরকার। এতে মাটি নরম হয় এবং রসুনের ফসল তােলা সহজ হয়।
ফসল তোলার পদ্ধতি :
রসুনের বীজ বােনার ১৩০-১৬০ দিনের মধ্যে রসুন তােলার উপযুক্ত হয়ে যায়। রসুনের পাতা হলদে হয়ে শুকোতে শুরু করলেই তােলার উপযােগী হয়ে ওঠে।কোদাল দিয়ে খুঁড়ে বা সেচ দিয়ে মাটি নরম হলে হাত দিয়ে টেনে রসুন তােলা যায়।রসুন তােলার পর ঝাড়গুলাে পরিষ্কার করে চার-পাঁচ দিন ছায়ায় রেখে সংরক্ষণ করতে হবে।
ফলন : প্রতি একরে ৩০-৪০ কুইন্টাল ফলন হয়।
আমাদের এই website-এ প্রবেশ করার জন্য আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধ্যন্যবাদ।আমরা এই ওয়েবসাইট -এর মাধ্যমে সমস্ত শাক-সবজি, ফসল চাষ এবং চাষবাস এর সবরকম বিষয় নিয়ে আলোচনা ও পোস্ট করে থাকি। আমাদের এই পোষ্টটি ভালোলাগলে আমাদের ওয়েবসাইট (চাষবাস-বারোমাস)-টিকে Follow করতে পারেন।পারলে আপনারা LIKE ও SHARE করবেন। আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। ধ্যন্যবাদ।
_____________________________________________________________________
If you have any doubts or questions, please let me know.... যদি আপনার কোনও সন্দেহ বা প্রশ্ন থাকে তবে দয়া করে আমাকে জানান.....