ফুলচাষের গুরুত্ব : Why do we cultivate flowers?
ঘর সাজানাে ছাড়াও পূজা-পার্বণ, বিবাহ, শ্রাদ্ধানু- ষ্ঠান প্রভৃতি বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রচুর পরিমাণে ফুলের প্রয়ােজন হয়। অর্থনৈতিক দিক থেকেও ফুলের চাষ বেশ লাভজনক। সমস্ত দেশ জুড়েই যেমন ফুলের চাহিদা আছে, তেমনি বিদেশের বাজারেও পশ্চিমবঙ্গের ফুলের কদর প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। প্রায় চার দশক ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে এদেশের ফুল রপ্তানি হচ্ছে। ফুলের সঙ্গে ফুলগাছের ব্যবসাও যুক্ত।
মানুষ সুন্দরের পূজারি। ফুলের আবেদন তাই মানুষের কাছেই অপরিসীম।সমতল অঞ্চলে জীবিকা হিসাবে ফুলের চাষ অতি জনপ্রিয় এবং দীর্ঘদিন ধরে সুপরিচিত। প্রায় অর্ধ শতাব্দী আগে পশ্চিমবঙ্গে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ফুলের চাষ প্রধানত এদেশে বসবাসকারী বিদেশিদের ফুলের চাহিদা মেটানাের তাগিদে, বর্তমানে এ রাজ্যের প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়।
এই রাজ্যে ফুলচাষের উপযােগী সমস্ত রকমের সুযােগ-সুবিধা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ফুলের চাষ হয় মেদিনীপুর জেলায়, তারপরেই হাওড়া ও নদীয়ার স্থান। উত্তরে দার্জিলিং এবং কালিম্পং অঞ্চলেও দীর্ঘদিন ধরে ফুলের চাষ হয়ে আসছে। বর্তমানে এ রাজ্যে প্রায় ৩৪ হাজার টন খােলা ফুল (loose flowers) এবং ৭ হাজার লাখ কাটা ফুল (cut flowers) উৎপন্ন হয়।
ফুলের চারা, কন্দ ইত্যাদি বিক্রি করে বেশ ভালাে দাম পাওয়া সম্ভব।ফুলের চাষকে জীবিকা হিসাবে নিতে হলে বিভিন্ন ধরনের ফুলচাষ একসঙ্গে করা উচিত। যেমন—ঘর সাজানাের উপযােগী ফুলের চাষের সঙ্গে সঙ্গে পুজো ও অন্যান্য কাজের উপযুক্ত ফুলগুলিকেও চাষের আওতার মধ্যে আনতে হবে।
ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ফুলচাষ বহু মানুষের অন্ন সংস্থানের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফুল তােলা, মালা গাঁথা, ফুলের কারুশিল্প ও ব্যবসায় অংশ গ্রহণ করে অনেকেই স্বনির্ভর হতে পারেন।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখা যায় যে, কিছু ফুলের চাষের মাধ্যমে পাওয়া লাভের পরিমাণ অনেকে খাদ্যশস্য জাতীয় ফসলের চেয়েও বেশি। বেশ জোরের সঙ্গেই বলা যায় যে, ফুলচাষ যথেষ্ট লাভজনক এবং অচিরেই অন্যান্য অনেক ফসলকে সরিয়ে চাষীর জমিতে এই ফুল গাছ চাষ নিজস্ব জায়গা করে নেবে।
বর্তমানে আমরা সচেষ্ট হচ্ছি আন্তর্দেশীয় বাজারে রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়ে ফুলচাষ সংক্রান্ত শিল্পের উন্নতিসাধন করতে আবার অন্যদিকে নজর দিতে হবে। রপ্তানির মাধ্যমে বেশি লাভজনক বাজারে শিল্পজাত সামগ্রীকে পৌঁছে দেওয়া, যা দেশীয় বাজারে বিক্রি হয় না বা বিক্রি হলেও ভাল দাম পাওয়া যায় না। পরিবহণের সুবিধা এই উদ্দেশ্যে সাধনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়ক। অর্থাৎ, আন্তর্দেশীয় বাণিজ্যের প্রসার ফুলচাষের সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করে।
ফুলচাষের সঙ্গে সঙ্গে সেই ফুলের সংরক্ষণ করাও খুবই জরুরি। এখন কলকাতাসহ বেশ কিছু জায়গায় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গুদামে অল্প অর্থের বিনিময়ে ফুল সংরক্ষণ করা হয়। ফলে অবিক্রিত ফুল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশ কিছুটা কমে গেছে। প্রয়ােজন মতাে বা চাহিদা অনুসারে গুদামে সংরক্ষিত ফুল বেশি দামে বিক্রি করা যায়। এইভাবে সংরক্ষণের সুবিধাও বাণিজ্যিক ফুলচাষের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে।
এছাড়া, কাঁচামাল হিসাবে কিছু শিল্পে ফুলকে ব্যবহার করারও যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। ফুল থেকে তৈলাক্ত পদার্থ নিষ্কাশন করে নানারকম জিনিস তৈরি করা হয়। উৎপাদিত জিনিস দু ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন-(ক) সুগন্ধি হিসাবে সাবান, আতর, ইত্যাদি সৌখিন দ্রব্য প্রস্তুতিতে, (খ) খাদ্যদ্রব্য হিসেবে, যেমন—গুলকন্দ। ব্যাপকভাবে ফুলচাষ করা হলে ফুল শিল্পকে কেন্দ্র করে প্রচুর শ্রমের সৃষ্টি হবে যা পরােক্ষভাবে ফুলচাষের ব্যাপকতাকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে।
পশ্চিমবঙ্গের মাটি ও জলবায়ু বিভিন্ন রকমের ফুলচাষের পক্ষে যথেষ্ট উপযোগী ।তাই এই লাভজনক ফুল চাষ করতে যারা আগ্রহী তারা আমার এই পোস্ট গুলি follow করুন।ফুল চাষে কোনো সমস্যা হলে বা কোনোকিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমাকে কমেন্ট করতে পারেন।
______________________________________________________________________________
If you have any doubts or questions, please let me know.... যদি আপনার কোনও সন্দেহ বা প্রশ্ন থাকে তবে দয়া করে আমাকে জানান.....