আখের ফলন বৃদ্ধির করণীয় উপায় : Various ways to increase sugarcane yield :
আগেই বলা হয়েছে যে, আখ বারাে মাসের ফসল। নানান ধরনের গবেষণা করে ছয় মাসের মধ্যে আখের ফসল তােলবার চেষ্টা চলছে। বৃষ্টির জলে আখের বৃদ্ধি বেশি হয়।বৃষ্টির অভাব হলে সেচের ব্যবস্থা করে আখের ফলন বাড়ানাে যায়। এছাড়া সামান্য পরিমাণ ‘জিব্বলিক অশ্ল” ব্যবহার করেও আখের বৃদ্ধি দ্বিগুণ করা যায়। আবার তাড়াতাড়ি ফসলের পুষ্টির জন্য “কেমিক্যাল রাইপেনায়” (যেমন পলােরিস, অ্যাস্টার, সাইকোসেল, রাইপেনথল প্রভৃতি) ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যায়। অন্ধপ্রদেশ অনাকাপল্লী আখ গবেষণা কেন্দ্র নং-৭০-এ-১১ এ জাতের আখ উদ্ভাবিত হয়েছে। এবং এ ধরনের আখ চাষ করলে ৬-৭ মাসে ফসল কাটার উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারে।
আখের ফলন বৃদ্ধির জন্য আখ গাছের পরিচর্যা করা ও ফসল কাটা খুবই জরুরী। আখ গাছের পরিচর্যা বলতে বােঝায় আগাছা দমন করা, গাছের গােড়ায় মাটি দেওয়া, আখের ঝাড় বেঁধে দেওয়া, শুকনাে পাতা ছড়ানাে, এসবই হলাে, প্রধান কাজ।ফসল কাটা বলতে কখন আপনি আখ কাটবেন তার ওপর ফলন বৃদ্ধি অনেকটা নির্ভরশীল।
(১) আখ লাগানাের দশ দিনের মধ্যে সেচ দেওয়ার পর যখন ‘জো আসবে তখন কোদাল, খুরপি, নিড়ানি, চাকাবিদা ইত্যাদি যন্ত্রের মাটির ওপরের অংশের চটা ভেঙে আগাছানাশক ওষুধ প্রয়ােগ করেও আগাছা নাশ করা যায়। আর এ কাজ করতে হবে আখ লাগাবার দু-তিন দিনের মধ্যে ২০০-৩০০ লিটার জলে ১৬০০ গ্রাম সিমাজিন বা এট্রাজিন গুলে এক একর আখের জমিতে ছিটলে চওড়া চওড়া পাতার আগাছা ও ঘাসের বিনাশ ঘটবে। মুথা ঘাস এবং অন্য সব চওড়া পাতার আগাছা বিনষ্ট করার জন্য ২০০ লিটার জলে ২ লিটার আনসার-৫২৯ এবং ৫০০ গ্রাম ২.৪ কি খুলে আখ গাছ গজিয়ে ওঠার পরেই প্রথমবার এবং এর এক সপ্তাহ পরে দ্বিতীয়বার আখের জমিতে স্প্রে করতে হবে।
মনে রাখতে হবে, এই ওষুধ প্রয়ােগের ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত জমিতে সেচ দেওয়া চলবে না। এ ছাড়াও আখের জমিতে আগাছা বিনাশ করবার জন্য গামাকেসান ও ফারনােকেসান ব্যবহার করা যেতে পারে।
(২) চারার বয়স দু মাস হলে গােড়ার মাটি নামিয়ে চাপান সার দিয়ে গাছের গােড়ায় মাটি দিতে হবে। আর আখ গাছের বয়স পাঁচ ছয় মাস হলে গাছের গােড়ার মাটি ধরিয়ে ভেলি বেঁধে দিতে হবে। এর ফলে গাছের পাশকাঠির সংখ্যা বেড়ে যায়, গােড়ার দিকের গাঁট থেকে শিকড় গজায় এবং গাছ নুইয়ে পড়া রদ করে। আখ গাছ পড়ে গেলে মিষ্টি ভাব কমে যায় এর ফলে সে গাছ থেকে চিনির রস কম পাওয়া যায়। এর ফলে স্বভাবতই চিনি ও গুড়ের পরিমাণ কমে যায়।
মনে রাখতে হবে, এই ওষুধ প্রয়ােগের ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত জমিতে সেচ দেওয়া চলবে না। এ ছাড়াও আখের জমিতে আগাছা বিনাশ করবার জন্য গামাকেসান ও ফারনােকেসান ব্যবহার করা যেতে পারে।
(২) চারার বয়স দু মাস হলে গােড়ার মাটি নামিয়ে চাপান সার দিয়ে গাছের গােড়ায় মাটি দিতে হবে। আর আখ গাছের বয়স পাঁচ ছয় মাস হলে গাছের গােড়ার মাটি ধরিয়ে ভেলি বেঁধে দিতে হবে। এর ফলে গাছের পাশকাঠির সংখ্যা বেড়ে যায়, গােড়ার দিকের গাঁট থেকে শিকড় গজায় এবং গাছ নুইয়ে পড়া রদ করে। আখ গাছ পড়ে গেলে মিষ্টি ভাব কমে যায় এর ফলে সে গাছ থেকে চিনির রস কম পাওয়া যায়। এর ফলে স্বভাবতই চিনি ও গুড়ের পরিমাণ কমে যায়।
(৩) আখ গাছের পাতা শুকিয়ে গেলে সেগুলাে ছিড়ে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। কারণ শুকনাে পাতা থাকলে পােকা রােগের উপদ্রব বেড়ে যায়। এছাড়াও পাতার কোলে, গাঁটে জল জমে যায়। এর ফলে গাঁটের অঙ্কুর দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে আখের শ্রীবৃদ্ধি ও মিষ্টতা কমে যায়। গাছের পুরনাে পাতা দিয়ে ঝাড়ের গাছগুলােকে জড়িয়ে বাঁধতে হবে। এ কাজ কিছু সময়ের বিরতির পর ৪-৫ বার করা হয়। গাছের পতন বােধ করবার জন্য পাশাপাশি কয়েকটি ঝাড়কে এক সঙ্গে বেঁধে দিতে হবে। এভাবে বেঁধে দিলে ঝড় উঠলে বা শেয়াল হানা দিয়ে আখের কোনাে ক্ষতি করতে পারবে না। আবার অনেক সময় আখ গাছের পতন বন্ধ করতে বাঁশের ঠেকা দিয়ে ঝাড়গুলােকে খাড়াভাবে রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
(৪) এক এক সময় শাখা দেরীতে বেরােয়, সেগুলােকে ছেটে ফেলতে হবে।
আখ ফসল কাটার পদ্ধতি :
আখ পুষ্ট বা পরিণত হলেই ঠিক সময়ে ফসল কাটা একান্ত প্রয়ােজন। এই কারণে যে, আগে বা পরে আখ কাটলে আখের শর্করার পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে চিনি বা গুড় উৎপাদনের পরিমাণ কমে যায়। নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলির ওপর লক্ষ্য রেখে আখ কাটার ব্যবস্থা করলে ক্ষতির পরিমাণ কম হতে পারে।
১। সাধারণত আখ গাছে ফল এলেই বুঝতে হবে যে, গাছগুলি পুষ্ট বা পরিণতি লাভ করেছে এবং ফসল কাটার সময় হয়েছে।
২। আর একটা লক্ষণ হলাে এই যে, গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হলেই বুঝতে হবে যে, ফসল কাটবার উপযুক্ত সময় হয়েছে এবং তখন গাছগুলি কেটে ফেলতে হবে।
৩। আখ গাছে টোকা দিলে যদি ঝনঝন শব্দ হয়, তাহলে বুঝতে হবে, আখ গাছ কাটার উপযুক্ত সময় হয়েছে।
৪। আখ গাছ কাটার সময় হলে অল্প চাপ দিলে গাঁট সহজেই ভেঙে যায় এবং রােদে চিকচিক করে। এছাড়াও পুষ্ট আখ খেতে খুব মিষ্টি লাগে এবং এর রস বেশ ঘনাে হয়ে ওঠে।
৫। এছাড়া আখ গাছ কাটবার উপযুক্ত হয়েছে কিনা, তা জানবার জন্য রিফ্লেক্টোমিটার করা যন্ত্রের সাহায্যে শর্করার পরিমাণ নির্ণয় করা যেতে পারে। শর্করার পরিমাণ চিনি উৎপাদনের উপযুক্ত হলেই আগাছ কাটা যেতে পারে।
৬। কোদাল দিয়ে মাটি কেটে যতদূর সম্ভব সমতল করে ফেলতে হবে। গাছের ডোগা ও পাতাগুলো ছেটে ফেলে ডালগুলোকে আঁটি বেঁধে আখ মাড়াইকালে পাঠানো হয় বা গুড় তৈরীর জন্য মাড়াই করা হয়। আখ কাটার পরই আখ মাড়াই করা দরকার। মনে রাখতে হবে, আখ রোদে পড়ে থাকলে বা শুকিয়ে যায়। তাই তা থেকে চিনি বা গুড় উৎপাদন কম হয়।
২। আর একটা লক্ষণ হলাে এই যে, গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হলেই বুঝতে হবে যে, ফসল কাটবার উপযুক্ত সময় হয়েছে এবং তখন গাছগুলি কেটে ফেলতে হবে।
৩। আখ গাছে টোকা দিলে যদি ঝনঝন শব্দ হয়, তাহলে বুঝতে হবে, আখ গাছ কাটার উপযুক্ত সময় হয়েছে।
৪। আখ গাছ কাটার সময় হলে অল্প চাপ দিলে গাঁট সহজেই ভেঙে যায় এবং রােদে চিকচিক করে। এছাড়াও পুষ্ট আখ খেতে খুব মিষ্টি লাগে এবং এর রস বেশ ঘনাে হয়ে ওঠে।
৫। এছাড়া আখ গাছ কাটবার উপযুক্ত হয়েছে কিনা, তা জানবার জন্য রিফ্লেক্টোমিটার করা যন্ত্রের সাহায্যে শর্করার পরিমাণ নির্ণয় করা যেতে পারে। শর্করার পরিমাণ চিনি উৎপাদনের উপযুক্ত হলেই আগাছ কাটা যেতে পারে।
৬। কোদাল দিয়ে মাটি কেটে যতদূর সম্ভব সমতল করে ফেলতে হবে। গাছের ডোগা ও পাতাগুলো ছেটে ফেলে ডালগুলোকে আঁটি বেঁধে আখ মাড়াইকালে পাঠানো হয় বা গুড় তৈরীর জন্য মাড়াই করা হয়। আখ কাটার পরই আখ মাড়াই করা দরকার। মনে রাখতে হবে, আখ রোদে পড়ে থাকলে বা শুকিয়ে যায়। তাই তা থেকে চিনি বা গুড় উৎপাদন কম হয়।
আখের ফলনঃ
পশ্চিমবঙ্গে প্রতি একরে গড় ফলন ১২৫-২০০ কুইন্টাল। সাধারণত ১০ কুইন্টাল আখ থেকে ৬ কুইন্টাল রস হয়, আর ৬ কুইন্টাল রস থেকে ১ কুইন্টাল গুড় পাওয়া যায়। অতএব ফলনের হিসাবটা এই রকম দাঁড়ায় আখ : রস : গুড় = ১০ : ৬ : ১
_______________________________________________________________________________
If you have any doubts or questions, please let me know.... যদি আপনার কোনও সন্দেহ বা প্রশ্ন থাকে তবে দয়া করে আমাকে জানান.....