Type Here to Get Search Results !

ধিংরি মাশরুম চাষ পদ্ধতি। Mushroom Cultivation.

ধিঙরি  মাশরুম চাষ পদ্ধতি :

 
ছত্রাক বা ছাতু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মাশরুম নাম পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টায়
উদ্ভিদ রােগতত্ব শাখার তত্ত্বাবধানে চুচুড়াস্থ ধান্য গবেষণা কেন্দ্র ও কালিম্পংস্থ জেলা বীজ খামারে ছত্রাক চাষের ব্যাপক উদ্যোগ  নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিশেষত :  বর্ধমান, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হুগলী, হাওড়া প্রভৃতি জেলায় এই চাষের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে।পশ্চিমবঙ্গে সারা বৎসর ব্যাপী ছত্রাক চাষের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। 


ধিংরি মাশরুম চাষ পদ্ধতি। Mushroom Cultivation.
Image by Jai79 from Pixabay 


পশ্চিমবঙ্গে ধীঙরি ছাতু, পোয়াল ছাতু, ও বোতামাকৃতি সাদা ছাতু স্বাভাবিক অবস্থায় ভালোভাবেই জন্মায়। প্রথমে ধিঙরি ছাতু বা মাশরুম চাষ সম্পর্কে অবগত করলাম। 

স্বাভাবিক উৎসস্থল  :-  

অ্যাগারিকাস কাম্পােস্ট্রিস এমনি এক সাধারণ প্রজাতি যা বর্ষা একক অথবা একসঙ্গে অনেকগুলি মাঠে, ময়দানে, চারণভূমিতে, ঝােপে-ঝাড়ে অকর্ষিত জমিতে যথেষ্ট পরিমাণে মৃতজীবীরূপে জন্মায় (যাকে আমরা ব্যাঙের ছাতা বলে থাকি)। এইসব মাশরুম ছত্রাক আমরা খাদ্যরূপে গ্রহণ করি এবং বর্তমানে এর পরিমাণ
বাড়ানাের জন্য ব্যাপক চাষ করা হচ্ছে।

অ্যাগারিকাস ক্যাম্পােসস্ট্রিস-এর বহুবর্ষজীবী মাইসিলিয়াম মাটির নীচে থাকে। একটু একটু করে মাঝের অংশটি নষ্ট হয়ে যায়, কিন্তু পাশে চারদিকে বিস্তার লাভ করতে থাকে। তবে এর জন্য মাটিতে যথেষ্ট পরিমাণে হিউমাস বা উদ্ভিজ্জ থাকা চাই। অনুকূল অবস্থায় মাইসিলিয়াম থেকে স্পােরােফোর বা ফলের মতাে দেহটি মাটির স্তর থেকে ভেদ করে
উপরে উঠে আসে।

ধিংরি ছাতু বা মাশরুম চাষ

ধিংরি এক বিশেষ জাতের মাশরুম। খুব বেশী গরম বা খুব ঠাণ্ডায় এর চাষ হয় না। সাধারণত অক্টোবর মাস থেকে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত এর চাষের প্রকৃষ্ট সময়। জানুয়ারী নাসে ঠাণ্ডার প্রকোপ খুব বেশী হলে এর চাষে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। অতি সহজে ও খুব কম খরচে ধিংরি ছাতুর চাষ করা যায়। এর চাষের জন্য ছায়াযুক্ত জায়গা, টুকরো খড়, বীজ,পলিথিন বা চটের থলি দরকার। পুরাতন ধানের খড় ২-৩ সেমি লম্বা করে টুকরো করে পরিষ্কার জলে ১০-১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভেজা খড় জল থেকে তুলে বাড়তি জল ঝরিয়ে নিতে হবে। এরপর প্রতি এক কেজি শুকনো খড় যা ভিজে চার কেজির মত হয় তার সাথে ১০০ গ্রাম পরিমাণ বীজের দানা ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। বীজ মেশানো ভিজে খড় পলিথিনের ব্যাগ বা চটের ব্যাগের মধ্যে চাপ দিয়ে ঠেসে ভরে, ব্যাগের মুখ বেঁধে দিতে হবে।
 
ভর্তি ব্যাগ পিপড়ে বা ইদুর থেকে নিরাপদ জায়গায় রেখে দিতে হবে। ১০-১৫ দিনের মধ্যে ব্যাগের ভিতরকার খড় ছত্রাক সূত্রে ছেয়ে গিয়ে পিণ্ডাকার ধারণ করবে। চটের ব্যাগ হলে মাঝে মাঝে জল ছিটিয়ে ব্যাগের উপরিভাগ ভিজিয়ে রাখতে হবে। ধারালো ছুরি দিয়ে জমাট বাঁধা পিণ্ডটি বের করে কোন উচু জায়গায় বা ঝুলিয়ে রেখে রোজ একাধিক বার আলতোভাবে জল ছিটিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে এইভাবে থাকলে ২০-২৫ দিনের মাথায় ছাতু জন্মে যায়। আরো ২-৪ দিনের পর ছাতু তোলার উপযােগী হয়ে যায়। প্রতি কেজি খড়ে ১ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যেতে পারে। একই বেডে ২-৩ মাস পর্যন্ত ছাতু জন্মাবে। এই পদ্ধতি ছাড়া পোয়াল ছাতুর মত খড় সাজিয়ে বা চৌকাকারে ট্রে বা গর্তের মধ্যেও এই ছাতুর চাষ করা যায়।

মাশরুম  সংরক্ষণ পদ্ধতি :

স্বাভাবিক অবস্থায় পােয়াল ছাতু ১ দিন, ধিংরি ১-২ দিন, সাদা  ছাতু ২-৩ দিন পর্যন্ত রাখা যায়। ফ্রিজে সব ছাতুই আরো অধিক দিন সংরক্ষণ করা যায়। টুকরো করা মাশরুম রৌদ্রে শুকিয়ে অনেক দিন রাখা চলে। শুকনো মাশরুম সংরক্ষণে শতকরা ১০ ভাগ লবণ-জলে ডুবিয়ে নিলে ভাল হয়। 

বীজ বা স্পন প্রাপ্তি স্থান :

চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রে উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব শাখার অফিস থেকে এই মাশরুম বীজ বা স্পন পাওয়া যায়।

আমাদের এই website-এ প্রবেশ করার জন্য আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধ্যন্যবাদ।আমরা এই ওয়েবসাইট -এর মাধ্যমে সমস্ত শাক-সবজি, ফসল চাষ এবং চাষবাস এর সবরকম বিষয় নিয়ে আলোচনা ও পোস্ট করে থাকি। আমাদের এই পোষ্টটি ভালোলাগলে আমাদের ওয়েবসাইট (চাষবাস-বারোমাস)-টিকে Follow করতে পারেন।পারলে আপনারা LIKE ও SHARE করবেন। আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। ধ্যন্যবাদ।

 
___________________________________________________________________

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.